
নওগাঁ জেলার বলিহার রাজবাড়ি শুধু একটি রাজপ্রাসাদ নয়, এটি উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও স্থাপত্যশিল্পের জীবন্ত সাক্ষী। এই রাজবাড়ির অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থাপনা হলো রাজরাজেশ্বরী দেবীর মন্দির, যা আজও অতীতের গৌরব ও কারুকার্যের নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নির্মাণ ও ইতিহাস-
বলিহার রাজবাড়ির অন্তর্গত এই রাজরাজেশ্বরী দেবীর মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে, তৎকালীন জমিদার রাজেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী কর্তৃক। সেই সময়ের রাজকীয় শাসন, ঐশ্বর্য ও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেছিল এই মন্দিরের স্থাপত্যে। এর নকশা ও গঠন এমনভাবে তৈরি, যা তৎকালীন বাংলার জমিদারি ঐতিহ্যের এক অনন্য শিল্পরূপ হিসেবে বিবেচিত।
দেবী রাজরাজেশ্বরীর মূর্তি-
মন্দিরের ভেতরে স্থাপিত আছে দেবী রাজরাজেশ্বরীর পিতলের মূর্তি, যা রাজপরিবারের উপাসনার প্রধান কেন্দ্র ছিল। রাজপরিবারের নারীরা বিশেষ পূজা ও আচার অনুষ্ঠান পালন করতেন এই মন্দিরে, যা তাদের বিশ্বাস ও সংস্কৃতির গভীরতাকে আজও স্মরণ করিয়ে দেয়।
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের প্রতীক
সময় ও অবহেলার কারণে মন্দিরটির মূল সৌন্দর্য অনেকাংশে ম্লান হয়ে গেলেও, এর স্থাপত্য এখনো ইতিহাসপ্রেমীদের বিস্মিত করে। মন্দিরের খিলান, অলঙ্করণ ও কারুকার্যে মিশে আছে রাজকীয় আভিজাত্য এবং বাংলার প্রাচীন স্থাপত্যরীতির অনন্য ছাপ। এটি শুধু একটি ধর্মীয় স্থান নয়, বরং অতীতের রাজকীয় ঐশ্বর্য ও শিল্পচেতনার নিঃশব্দ সাক্ষী।
ইতিহাসের আহ্বান
বলিহার রাজবাড়ির এই মন্দির সংরক্ষণ করা গেলে, এটি নওগাঁর অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক গন্তব্যে পরিণত হতে পারে। অবস্থান: বলিহার রাজবাড়ি, নওগাঁ সদর নির্মাতা: জমিদার রাজেন্দ্রনাথ রায় চৌধুরী (১৮২৩ খ্রিস্টাব্দ) দেবী: রাজরাজেশ্বরী দেবী
Leave a Reply